,

দাকোপে বেড়িবাঁধ নদীগর্ভে বিলীন, শতাধিক পরিবার পানিবন্দি

এম. ডি অসীম, খুলনা: খুলনার দাকোপ উপজেলার ৩২নম্বর পোল্ডারের কামারখোলা ইউনিয়নের পূর্ব ভিটেভাঙ্গা ঢাকী নদী এবং সুতারখালী ইউনিয়নের কালাবগী গ্রামের শিবসা-সুতারখালী নদীর মোহনায় তীব্র নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে ভাঙন কবলিত দুটি স্থানে প্রায় একশ গজ ওয়াপদা বেড়িবাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে  ওই এলাকায় প্রায় শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নদী ভঙনের দুদিন অতিবাহিত হলেও বেড়িবাঁধ সংস্কার করা সম্ভব হয়নি। এর ফলে অনেকে পরিবার-পরিজনসহ পাশবর্তী বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছেন। এ অবস্থায়  ভাঙন কবলিত স্থানের পাশ দিয়ে দ্রুত বিকল্প বাঁধ নির্মাণ না করা হলে যে কোনো মুহূর্তে আইলার মতো ভয়াবহ পরিস্থিতি ধারণ করে আবারও দুই ইউনিয়নের জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে আসার আশঙ্কা রয়েছে।

কামারখোলা ও সুতারখালী ইউনিয়নের স্থানীয় জনসাধারণ ও জনপ্রতিনিধি সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় নদ-নদীর পানি স্বাভাবিক অপেক্ষা চার থেকে পাঁচ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর প্রবল জোয়ারের তোড়ে বুধবার ভোরে ৫নম্বর সুতারখালী ইউনিয়নের কালাবগী গ্রামের শিবসা-সুতারখালী নদীর মোহনার ওয়াপদা বেড়িবাঁধের প্রায় ৫০ গজ নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এতে নদীর পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ায় কালাবগী গ্রামের ৭০টি পরিবার সম্পূর্ণভাবে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। নদীর পানিতে ভেসে গেছে প্রায় অর্ধশত বাগদা চিংড়ির ঘের ও শতাধিক পুকুরের সাদা মাছ এবং তলিয়ে গেছে আমন ধানের ক্ষেত।

কামারখোলা ইউপি চেয়ারম্যান পঞ্চানন মণ্ডল জানান, কামারখোলা ইউনিয়নের বুধবার দুপুরে পূর্ব ভিটেভাঙ্গা এলাকায় ঢাকী নদীতে ৫০ মিটার ওয়াপদা বেড়িবাঁধ নদী গর্ভে বিলেন হয়েছে। এলাকার ৩শ বিঘা আমন ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া ওই গ্রামের ৩০টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ায় ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। এ স্থানের বাঁধটি দ্রুত সংস্কার করা হলে নদীর জোয়ারের তোড়ে ওয়াপদা বেড়িবাঁধের বাকি অংশ ঢাকী নদীতে বিলীন হয়ে দুটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে আইলার মতো ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

এ বিষয়ে সুতারখালী ইউপি চেয়ারম্যান মাসুম আলী ফকির জানান, ভোরবেলা বাধঁটি ভেঙে যাওয়ার খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে ছুটে যায়ে বাঁধটি কোনো রকমে সংস্কার করেছি। বাধঁটি আবারও যে কোনো সময় নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই ওই বাঁধটির পাশ দিয়ে দ্রুত বিকল্প বাঁধ নির্মাণের প্রয়োজন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বলেন, ভেঙে যাওয়া বাঁধ দুটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিত্যাক্ত বাঁধ। ওই বাঁধের ভেতরে আমাদের রিয়টায়েড বাঁধ রয়েছে। এই মুহুর্তে বাঁধ দুটি সংস্কারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো অর্থ বরাদ্দ করতে পারছে না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল ওয়াদুদ জানান, ভেঙে যাওয়া বাঁধটি সম্পর্কে আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসককে অবগত করেছি।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেহেতু ভেঙে যাওয়া বাঁধ দুটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের তাই রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বটাও তাদের। ওই বাঁধ দ্রুত সংস্কার বা বিকল্প বাঁধ নির্মাণের জন্য তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর